ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

কুতুবদিয়া চ্যানেলে ভোগান্তির পারাপার

এম.এ মান্নান, কুতুবদিয়া :: কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন ১৯ জুলাই রাতে। প্রথম দফায় একটি এনজিও‘র ক্লিনিকে নেয়া হলে তারা চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হাসপাতালে পাঠায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেলিভারির সময় শিশুটির মাথায় আঘাত পাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেয়ার পরামর্শ দেয় হয় রোগীর পরিবারকে। মুমূর্ষ শিশুকে অক্সিজেন দিয়ে ৩ কিলোমিটার দূরত্বে বড়ঘোপ জেটিঘাট ।

হাসপাপতাল থেকে বাহিরে নেয়ার মত অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই। ২০ জুলাই সকালে ব্যক্তিগত এক ব্যবসায়ির অক্সিজেন সিলিন্ডার ৬০০ টাকায় ভাড়া নিয়ে ৪ কিলোমিটারের চ্যানেল পাড়ি দিয়ে মগনামা থেকে ৫ হাজার টাকায় এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এটি ছিল বড়ঘোপ মাতবর পাড়ার দরিদ্র আবুল কাশেমের স্ত্রীর নবজাতক শিশুর ঘাট পারাপারের চিত্র। প্রতিনিয়ত রোগী সহ সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তি নিয়েই চ্যানেল পার হন।
পর্যাপ্ত সুবিধা নেই কোন জেটি ঘাটেই। প্রয়োজনীয় সুবিধা যাত্রীরা না পেলেও সরকার চলতি বছর ২০ লক্ষ টাকা বাড়তি ইজারামূল্য ঠিকই পেয়েছে। ভাটার সময় ডেনিস বোট কিংবা স্পীডবোটে ওঠা-নামার জ্বালা ভুক্তভোগিরা ছাড়া কেউ টের পায়না। ফলে চ্যানেল পারাপাারে ফেরী সার্ভিস চালুর দাবি ছিল অবহেলিত দ্বীপবাসির। তবে সচেতন মহল মনে করেন দ্বীপের কোন জেটিই পল্টুন স্থাপন বা ফেরী পারাপারের উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হয়নি। যে কারণে প্রতিটি জেটি সংস্কার করাও এখন সময়ের দাবি।

অপরদিকে বেসরকারি সংস্থা থেকে হাসপাতালে দেয়া সী এ্যাম্বুলেন্সটি (স্পীডবোট) এখনো পারাপারে নামেনি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর করেননি। সাধারণ স্পীডবোটের চেয়ে জ্বালানি খরচ নাকি অনেক বেশি লাগবে। যে কারণে স্ট্রোকের রোগী, নিওমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিতে ডোবা শিশু সহ জরুরী রোগী অক্সিজেন সহ পারাপারে ভোগান্তির শেষ নেই। ৫০ শয্যার হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির ব্যবস্থা থাকলেও এখনো চালু নেই নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্র, নেই অপারেশন থিয়েটার কার্যক্রম।

ঘাটের ইজারাদার কামরুল হাসান সিকদার জানান, বিগত সময়ে সরকারি খাস কালেকশন নামে টোল আদায় নিয়ম অনুযায়ি আগের নিয়মেই জেটি, চ্যানেল পারাপারে ভাড়া নেয়া হচ্ছে। জরুরী রোগী পরিবহণে ডেনিশ, স্পীডবোট প্রস্তুত থাকে। তবে নির্ধারিত সময়ের বাইরে হলে রিজার্ভ নিতে হয়। ঘাটে ফেরী চলাচলের ব্যাপারে তিনি বলেন, দ্বীপের কোন জেটিই গাড়ী পার্কিং বা ফেরিতে ওঠার সুবিধা সমেত নির্মাণ করা হয়নি। ফলে আগে জেটি সংস্কার করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা: মো: শাহীন আব্দুর রহমান চৌধুরী জানান, হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সটি মগনামা থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রামে জরুরী রোগী পরিবহণে নিয়জিত থাকে। নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্র, ওটি, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন স্থাপন কার্যক্রম চলছে। নিয়মিত সেবা চালু হলে নবজাতক সহ রোগীদের সেবার পরিধি অনেকটা বাড়বে ও সেই সাথে ভোগান্তিও কমবে বলে তিনি মনে করেন।

পাঠকের মতামত: